কিভাবে অ্যাবস্ট্র্যাক্ট ফটোগ্রাফি করবেন
() translation by (you can also view the original English article)
ফটোগ্রাফি অনেক ধাঁচে ও ভিন্ন স্টাইলে করা যায়, যার প্রায় সবকটাই ফাইন আর্টসের কোন না কোন ক্যাটাগরিতে পরে। দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে আছে অ্যাবস্ট্র্যাক্ট ফটোগ্রাফি, যেটা নিয়ে আজকে আমরা কথা বলব। অ্যাবস্ট্র্যাকট ফটোগ্রাফি একটি নান্দনিক প্রকাশভঙ্গী, যেটা দর্শকদের কিছু শেখাতে বা তাদের কাছে তুলে ধরতে হয়, বরং শৈলী দিয়ে তাদের উৎসাহিত করে তোলার জন্য তোলা হয়।
১ম ধাপঃ অ্যাবসট্রাক্ট ফটোগ্রাফি কি?
অ্যাবস্ট্রাকট ফটোগ্রাফির কোন সহজ সংজ্ঞা নেই। কালার, লাইন, টেক্সচার ছবিতে ফুটিয়ে তোলার আর্টকে অ্যাবসট্রাকট ফটোগ্রাফী বলে। অ্যাবস্ট্রাক্ট ফটোগ্রাফি করতে কোন স্পেশাল সরঞ্জাম লাগে না, শুধু একটি ক্যামেরা আর কল্পনাশক্তিই যথেষ্ট।
২য় ধাপঃ অ্যাপ্রোচ
অ্যাবস্ট্রাক্ট ফটোগ্রাফি কিভাবে শুরু করা যায়? প্রথমে ইন্টারেস্টিং সাব্জেক্ট ম্যাটার খুঁজে নিতে হবে। আমার যেটা চোখে পড়ে, নজর কাড়ে, এমন সাব্জেক্ট আমি অ্যাবস্ট্রাক্ট তোলার জন্য বেছে নেই। একটি সাব্জেক্ট দেখতে কেন ভালো লেগেছিল, এটা বুঝে ওই বৈশিষ্ট ছবিতে তুলে নিতে পারলেই সেটা অ্যাবস্ট্রাক্ট। বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও অ্যাংগেল থেকে দেখে, সাব্জেক্ট বোঝার চেষ্টা করুন, কিভাবে তুললে বেষ্ট হবে এটা বের করুন।
এই ছবি তোমার জন্য বাঁধাধরা কোন ক্যামেরা সেটিংস নেই। ম্যানুয়ালি তুলে দেখতে পারেন। যে কোন ক্যামেরা ব্যবহার করে যে কোন সেটিংস দিয়েই তুলতে পারেন, সাব্জেক্ট রিভিল হলেও হয়।
৩য় ধাপঃ নিয়ম ভাঙা!
সাব্জেক্টের আক্ষরিক সংজ্ঞা কিছুক্ষণের জন্য ভুলে যেতে হবে। আমরা সাব্জেক্টকে একটি বিষয়বস্তু হিসেবে তুলে না ধরে এটা দিয়ে একটি অভিব্যাক্তি তুলে ধরতে চাইছি। তাই ফটোতে কি ভাব ফুটে উঠবে এটা নিয়ে সৃজনশীল ভাবে চিন্তা করুন। নতুন ফটোগ্রাফিক কনসেপ্ট ভেবে বের করা একটি দুরহ কাজ। এটিই অ্যাবসট্রাক্ট ফটোগ্রাফির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। অ্যাবস্ট্রাক্ট ফটোগ্রাফি সাদা ক্যানভাসে নিজের অনুভূতি ফুটিয়ে তোলার সমানুপাতিক। এখন ভাবুন কিভাবে সাব্জেক্টের রেখা, টেক্সচার, কালার ও ফর্ম দিয়ে এমনটি ছবিতে তুলে ধরা যায়।
৪র্থ ধাপঃ প্যাটার্ন ও লাইন
প্রথমে সাব্জেক্টের প্যাটার্ন ও লাইনগুলো খেয়াল করতে হবে। দেখতে হবে সাব্জেক্টের এই ফিচারগুলো কোন বহমান জ্যামিতিক শেপ তুলে ধরছে কিনা। এরপর সেই প্রিন্সিপাল কাজে লাগিয়ে আমাদের ছবি তুলতে হবে। আমি সবসময় স্ট্রেইট, সিম্যাট্রিক্যাল অব্জেক্টের ছবি তোলার চেষ্টা করি। এমন ক্লিনিক্যাল প্যাটার্ন ছবিতে প্যাটার্ন এনহ্যান্স করতে সাহায্য করে। সাব্জেক্টের প্রান্তিক রেখা ও কোণগুলো খেয়াল করুন। সোজা ও বাঁকা লাইনের ছবির ধরণে তফাৎ আছে। সাব্জেক্টের প্রান্তিক রেখাগুলো দর্শকের কাছে ফটোগ্রাফের দৃষ্টি আকর্ষনের ফিচার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তাই এই ব্যপারটি শিখে নেয়া ভালো হবে।
৫ম ধাপ - ফর্ম
৫ম ধাপ - ফর্ম ছবিতে সাব্জেক্টের ফর্ম তুলে ধরবেন না অন্য কোন দৃষ্টিভঙ্গি কাজে লাগাবেন তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিন। এটাও খেয়াল করুন যে এমন কোন শেপ আছে কিনা সাব্জেক্টে যেটা আপনি কাজে লাগাতে পারেন, যেমন ত্রিজুভ, চতুর্ভুজ, ষড়ভুজ ইত্যাদি!
৬ষ্ঠ ধাপ - কালার
অ্যাবস্ট্রাক্ট শটের সবচেয়ে ভিসুয়াল ইলিমেন্ট হচ্ছে কালার বা রঙ। এটা সাথেসাথেই চোখে পড়ে এবং সাব্জেক্টকে ফুটিয়ে তুলতে সহায়তা করে। এটা মুড সেটিং এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই নিজের ছবিতে কালার এর ব্যবহার কিভাবে করা যায় তা নিয়ে গভীরভাবে ভাবুন।
৭ম ধাপ - আর্কিটেকচার নিয়ে কাজ
আর্কিটেকচার অ্যাবস্ট্রাক্ট সাব্জেক্টকে ইন্টারেস্টিং করে তোলে, বিশেষভাবে বর্তমান যুগের দালার ও স্থাপনার নির্মানশৈলী ও অবকাঠামোর স্টাইল। এটি খুব সহজেই একটি ভালো শট নেয়ার জন্য ম্যানিপুলেট করা যায়। পুরোনো দালান ও ইমারতের নির্মানশৈলী ও গাঁথুনিতে একরকম সিমেট্রি থাকে, যা আপনি নিজের শটে তুলে ধরতে পারেন। নতুন দালানের হিসেব একটু আলাদা। এতে অনেক রকম শেপ, বিষম কোণ ও নির্মানে বিভিন্ন রকম নতুন মালামাল ব্যবহার করা হয়। এসব স্থাপনায় বড় কাঁচের অংশ ও সলিড কালারের ব্যবহার বেশি দেখা যায়। সময় নিয়ে স্থাপনা দেখুন (ভিতরে ছবি তুলতে অনেক সময় আপনাকে অনুমতি নিতে হতে পারে) এরপর কোন এঙ্গেল থেকে ছবি তুলবেন তা সিধান্ত নিন!
৮ম ধাপ - অ্যাবস্ট্রাক্ট এবং ম্যাক্রো
অ্যাবস্ট্রাক্ট ছবি তোলার জন্য আরেকটি টেকনিক ব্যবহার করা হয়, সেটা হচ্ছে ম্যাক্রো। কিছু সাব্জেক্ট ম্যাটার এমন আছে যেগুলা একটু দূরে থেকে ছবি তুললে সহজেই রেকগনাইজেবল হয়ে যেত, কিন্তু ফটোগ্রাফারের ম্যাক্রোতে ছবি তোলার কারণে সাব্জেক্ট এর কালার ও টেক্সচার ফুটে উঠে সেটা একটি অনন্য অ্যাবস্ট্রাক্ট শট হয়ে ওঠে। আমার ক্ষেত্রে, আমি সাব্জেক্ট ম্যাটার ভিউফাইন্ডারের মাঝে সেন্টার করি, শটে ব্ল্যাংক স্পেস যেন না থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ফুলের ছবি তোলার সবচেয়ে কমন এঙ্গেল হচ্ছে উপর থেকে, তাই আপনি নিচে থেকে আলোর দিকে তাক করে শট নিয়ে দেখতে পারেন কেমন ছবি আসে।
৯ম ধাপঃ আপনি একজন আর্টিস্ট!
আগে যেমন উল্লেখ করেছি, অ্যাবস্ট্রাক্ট ফটোগ্রাফির প্রকাশভঙ্গী ও মাত্রা অন্যান্য ফটোগ্রাফি থেকে অনেক আলাদা, এটা মনে রাখা ভালো। কারণ অনেক সময় ছবি দেখে টের পাওয়া যাবে না যে ছবির সাব্জেক্ট কি। এমন আশা করবেন না যেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আপনি ছবিটি দেখছেন, অন্যরাও সেই নজরেই দেখবে। আমার ভালো লাগে যখন মানুষ জিজ্ঞেস করে ছবির সাব্জেক্ট কি, বা তারা নিজে থেকে সম্পুর্ন ভিন্ন জিনিষ ভেবে বসে। মানুষ কিভাবে চিন্তা করছে তা এই প্রসেস থেকে জানা যায়। অ্যাবস্ট্রাক্ট ফটোগ্রাফি একটি খুবই পার্সোনাল অভিব্যাক্তি। আমি ছবি তোমার সময়, সাব্জেক্ট, অ্যাপ্রোচ, এঙ্গেল, এক্সপোজার ইত্যাদি সব নিজেই সিলেক্ট করি।
১০ম ধাপ - ট্রাই করে দেখুন!
এবার আপনি নিজে ট্রাই করে দেখুন। বাইরে যান, কিছু সাব্জেক্ট সিলেক্ট করুন আর ছবি তোলা শুরু করুন। নতুন পরিবেশে ছবি তোলার অনেক সাব্জেক্ট খুঁজে পাওয়া যায়, তো একটা নির্বাচন করে নিতে আপনার কিছু সময় লাগবে। আমি আউটিং এ সবসময় 50mm প্রাইম লেন্স ব্যবহার করি। কারণ এটা কম সময়ে ব্যবহার করা যায়, আর এটি দিয়ে আর্টিস্টিক রেজাল্ট পাওয়া যায়। সব সময় ক্যামেরা আপনার সাথে রাখুন, যেন কোন সাব্জেক্ট নজরে পড়লেই সেটার শট নিতে পারেন।