বজ্রপাতের নিখুঁত ছবি তুলবেন কিভাবে
() translation by (you can also view the original English article)
বজ্রপাতের ছবি তোলা একটা দারুণ ব্যাপার! তবে আগে থেকে পরিকল্পনা না করলে বা চিন্তা ভাবনা করে না এগুলে এটি বেশ বিপদজনক এবং দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এই টিউটোরিয়ালে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হবে। সেই সাথে পরেরবার যখন ঝড়ের মধ্যে গুড়গুড় শব্দে বাজ পড়বে তখন নিরাপদে ও সুন্দরভাবে বিদ্যুতের ছবি তুলে সেগুলো পোস্ট প্রসেস করার কলাকৌশল শিখিয়ে দেওয়া হবে।
ছবির চূড়ান্ত রূপ



ধাপ ১: যন্ত্রপাতি



প্রয়োজন: ষ্ট্যাণ্ডার্ড অ্যাংগল জুম বা প্রাইম লেন্স, পোলারাইজিং ফিল্টার, রিমোট কেবল শাটার রিলিজ, বিন ব্যাগ, আর অসীম ধৈর্য!
পরামর্শ: নিরবিচ্ছিন্ন ড্রাইভ মোডের এসএলআর ক্যামেরা।
প্রকৃতির অন্য অনেক সাবজেক্টের মতোই, বজ্রপাতও ভীষণ অনিশ্চিত। সঠিক যন্ত্রপাতি যোগার করা মানেই সফলভাবে বজ্রপাতের ছবি তোলার পথে অনেকদূর এগিয়ে যাওয়া। এপিএস-সি সেন্সর ক্যামেরার জন্য ৩০ মি.মি. প্রাইম বা ফুল-ফ্রেম ক্যামেরার জন্য ৫০ মি.মি. প্রাইমের মতো ষ্ট্যাণ্ডার্ড অ্যাংগল জুম লেন্স দিয়ে ছবি তুললে তা পুরো বজ্রপাতটির ছবিটিকে একটি ফ্রেমে ধরতে সাহায্য করবে। ১৬-৩৫ মি.মি. বা ২৪-৭০ মি.মি. এর মতো ওয়াইড অ্যাংগল থেকে ষ্ট্যাণ্ডার্ড অ্যাংগল জুম লেন্স ব্যবহার করা যাবে। তবে প্রাইম লেন্স দিয়ে একই ফোকাল লেংথে জুম সেট করলে যেমন হবে তার চাইতে অনেক বেশি তীক্ষ্ণ ছবি তোলা সম্ভব।
মিনিমাম অ্যাপারচার কোন বিষয় না। কারণ বজ্রপাতের ছবির জন্য যে অ্যাপারচার সেটিং ব্যবহার করা হয় তা বেশিরভাগ লেন্সের মিনিমাম আপারচারের চাইতে ধীরগতির। ট্রাইপডের বদলে বিন ব্যাগ দিয়ে ক্যামেরার সাপোর্ট তৈরি করুন। কারণ ছবিটি তোলা হবে অটোমবাইলের ভিতর থেকে। বিন ব্যাগকে অনেক সময় শট ব্যাগও বলা হয়। এটি যে কোন ফটোগ্রাফিক বা ভিডিও সাপ্লাইয়ের দোকানে কিনতে পাওয়া যাবে। আমি আমারটা একটি উপযুক্ত ও টেকসই ব্যাগ যোগার করে নিজে তৈরি করেছি, উপরে ছবি দেওয়া আছে। এটি একটি পুরনো লিড শট ব্যাগ থেকে তৈরি করা। এরপর, আমি ব্যাগটিকে শুকনো বিন দিয়ে পূর্ণ করে সবশেষে খোলা মুখ দুটো সেলাই করে দিয়েছি যাতে ভিতরের বিনগুলো পড়ে না যায়। কাজটি খুব সহজ আর আমার ফটোগ্রাফির যন্ত্রপাতির জন্য এটি একটি বেশ জরুরী উপকরণ।
উপরে দেখানো বজ্রপাতের ছবিটি তোলার জন্য আমি ক্যানন ডিজিটাল রেবেল টিথ্রিআই ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার করেছি। এছাড়া ক্যানন ইএফ-এস ১৮-৫৫ মি.মি. এফ/৩.৫-৫.৬ আইএস “কিট” লেন্স ৩৫ মি.মি. পর্যন্ত জুম আউট করে, ক্যানন আরএস৬০-ইথ্রি কেবল রিলিজ, এবং সাপোর্টের জন্য একটি ঘরে তৈরি বিন ব্যাগ ব্যবহার করেছি।
ধাপ ২: বজ্রপাত খুঁজে বের করা



ছবি তোলার জন্য বজ্রপাত খুঁজে বের করা বেশ দুঃসাধ্য ব্যাপার। যেহেতু আমি আবহাওয়া সম্পর্কে বিশেষ উৎসাহী এবং ঝড় তাড়া করে বেড়ানো আমার শখ কাজেই প্রতিদিন অন্তত একবার আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে নেওয়া আমার অভ্যাস। ফলে কখন কখন ঝড়ো আবহাওয়া দেখা দিবে তা আমি আগে থেকেই জানতে পারি। আপনার স্থানীয় আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানার উপযুক্ত জায়গা হচ্ছে ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস ওয়েবসাইট। এনডাব্লিউএস সাইটের পাশাপাশি রাদার এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়ার আরেকটি চমৎকার উৎস হচ্ছে আপনার স্থানীয় টেলিভিশন নিউজ স্টেশনের ওয়েবসাইট। সাধারণত, ঝড়ো আবহাওয়াতে নিউজ স্টেশনগুলো সমস্ত সাইট ভিজিটরদের দেখা ও পর্যবেক্ষণের জন্য ওয়েবসাইটের প্রথম পাতায় অ্যানিমেটেড রাডার প্রদর্শন করে।
যেসব দিনে ঝড় আসবে বলে আশঙ্কা করা হয়, সেসব দিনে আমি এনডাব্লিউএসের সাইটের স্থানীয় রাডারে চোখ রাখি এবং কোন ঝড় আমার এলাকায় আসে কিনা তা খেয়াল করি। ঝড় যদি আমার শুটিঙের এলাকার ২০ মাইলের মধ্যে চলে আসে তাহলে আমি সেই লকেশনে যেয়ে সেট আপ তৈরি করে ঝড়ের অপেক্ষা করতে থাকি। এই প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করা বাধ্যগত কিছু না। কারণ আপনি চাইলে বজ্রপাতের ডাক শোনামাত্র ক্যামেরা সেট করে জানালা বা দরজার ফাঁক দিয়ে ছবি তুলতে পারেন। ফলাফল একই হওয়া উচিত। যাই হোক, উপরের প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করলে যেখান থেকে ছবি তুললে সবচাইতে ভালো হবে সেই জায়গাটি নির্বাচন করার সময় পাওয়া যায়।
ধাপ ৩: সেরা ও নিরাপদ জায়গা খুঁজে বের করা
বজ্রপাতের ছবি তোলার লোকেশন নির্বাচন করার সময় আকাশের দৃশ্য সুন্দরভাবে দেখা যায় এই চিন্তা ছাড়াও নিরাপত্তার দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে। স্থানীয় জলাধারগুলোতে বজ্রপাতের ছবি খুব চমৎকারভাবে তোলা যায় যদি না সেটি গাছে ঘেরা হয়। এমনকি তা হলেও অন্তত একদিকের দৃষ্টিসীমা যদি বাধাহীন হয় তাহলেই আপনার কাজ হয়ে যাবে।
খোলা মাঠেও কাজ চালানো সম্ভব। তবে অপেক্ষাকৃত লম্বা কোন বস্তু না থাকলে সেক্ষেত্রে আপনার গাড়িটি বজ্রপাতের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তবে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। কারণ আপনি গাড়ির ভিতরে থাকা অবস্থায় সেটি বজ্রাহত হলেও আপনি একদম নিরাপদে অক্ষত অবস্থায় থাকবেন। কারণ গাড়ির ধাতব দেহ বজ্রপাত থেকে বিদ্যুৎ আকর্ষণ করে নিয়ে সরাসরি মাটিতে সরবরাহ করে দিবে।
বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, বজ্রপাতের ছবি তোলার সবচাইতে ভালো জায়গা হল লম্বা পাওয়ার ট্রান্সমিশনের লাইনগুলোর আশেপাশে। এই টিউটোরিয়ালে ব্যবহৃত ছবিটি এমনই একটি লোকেশনে তোলা হয়েছিলো। শুনতে হাস্যকর লাগলেও, আপনার গাড়ির চাইতে ওইসব লম্বা টাওয়ারে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি কারণ সেখানে প্রচুর চার্জিত আয়ন থাকে যেগুলো বজ্রপাতের সাথে বিক্রিয়া করে। এতে কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। নিরাপত্তার পাশাপাশি বজ্রপাতের সুযোগও এসব এলাকায় বেশি থাকে।
একবার আপনি কোন শুটিঙের লোকেশন নির্বাচন করে ফেললে প্রথমেই সেখানে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে নিবেন। আমি পরামর্শ দিবো বজ্রপাতের ছবি তোলার সময় কখনোই বাইরে দাঁড়িয়ে না থাকতে। এই পরিস্থিতিতে বজ্রাহত হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। মনে রাখবেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর আবহাওয়াঘটিত কারণে মৃত্যুর মধ্যে বজ্রাঘাতে মৃতের সংখ্যাই সবচাইতে বেশি। শুধুমাত্র নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই আমি সবসময় আমার গাড়ির ভিতরে থেকে বজ্রপাতের ছবি তুলি।
ধাপ: শটের জন্য সেট আপ ঠিক করা



অটোমোবাইলের ভিতর থেকে বজ্রপাতের ছবি তোলার প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ। বিন ব্যাগ বা এই ধরণের কোন একটি সাপোর্ট গাড়ির ড্যাশবোর্ডে স্থাপন করুন। ক্যামেরাটি ড্যাশবোর্ডের উপর রেখে লেন্সটি বিন ব্যাগের সাথে ঠেকিয়ে রাখুন। কেবল রিলিজটি সংযুক্ত করুন এবং হয়ে গেলো আপনার প্রস্তুতি! আপনার শুটিঙের সময় যদি ব্রিশ্তি হয় তাহলে আপনার উইন্ডশিল্ডের ওয়াইপারটি চালু করতে ভুলবেন না। এতে করে আপনার ছবির কোন হেরফের হবে না কারণ স্লো শাটার স্পিড ব্যবহার করা হবে। ফলে চলন্ত ওয়াইপারটি অদৃশ্য থেকে যাবে।
এখন আমরা কম্পোজিশন নিয়ে আলোচনা করতে পারি। বজ্রপাতের ছবি তোলা অন্যান্য যে কোন সাবজেক্টের ছবি তোলার চাইতে ভিন্ন। কারণ কখন কোথায় বজ্রপাত হতে পারে তা আমি আগে থেকে জানবেন না। সত্যি কথা বলতে, এটি আপনার লেন্সের দৃষ্টিসীমার বাইরেই পড়বে। ফলে আপনার ফ্রেমে বজ্রপাতহীন ফাঁকা একটি দৃশ্য ধরা পড়বে। এটি বেশ হতাশাজনক। এইজন্যই আমি বলি প্রচুর ধৈর্যের প্রয়োজন এই কাজে। ড্যাশবোর্ডের মধ্যে ক্যামেরা সেট করা এবং ষ্ট্যাণ্ডার্ড অ্যাংগল ফোকাল লেংথ ব্যবহার করে উইন্ডশিল্ডের ফাঁক দিয়ে ছবি তুলতে গেলে আপনার ক্যামেরার দৃষ্টিসীমার মধ্যে পড়ে এমন যে কোন বজ্রপাতের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করা সম্ভব।
ধাপ ৫: ক্যামেরা সেটিঙের ব্যাপারে পরামর্শ



বজ্রপাতের ছবি তোলার জন্য সাধারণত ধীরগতির শাটার স্পিড দরকার হয়। যাতে করে প্রতিবার এক্সপোজার দেওয়া হলে অন্তত একটি বিদ্যুৎ চমক ধরতে পারার মতো সময় পাওয়া যায়। এইসব ক্ষেত্রে নিরবিচ্ছিন্ন ড্রাইভ মোডসহ একদম প্রাথমিক স্তরের ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা কাজে লাগে। আপনি আপনার এক্সপোজার সেটিং পরিবর্তন করতে পারেন, কেবল রিলিজে শাটার রিলিজ বাটন চালু বা লক করতে পারেন। এরপর চুপচাপ বসে বজ্রপাতের খেলা দেখতে থাকুন। আপনার ক্যামেরা আর কেবল রিলিজ বাকি কাজটা করে নিবে।
নিচে বজ্রপাতের ছবি তোলার জন্য একটি আউটলাইন এবং এক্সপোজার সেটিং বিষয়ক কিছু ব্যাখ্যা ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আপনি হয়তো এতক্ষনে বুঝে ফেলেছেন যে ক্যামেরাটিকে সম্পূর্ণভাবে ম্যানুয়ালে সেট করতে হবে যাতে আপনি নিজের মতো করে অ্যাপারচার, শাটার স্পিড, এবং আইএসও ঠিক করতে পারেন।
আইএসও: ১০০ - আমি আমার ক্যামেরার আইএসও সেটিং ১০০-তে দিয়েছিলাম এবং বজ্রপাতের ছবি তোলার সময় সেভাবেই রেখে দিয়েছিলাম। এতে করে সবচাইতে হালকা নয়েজ তৈরি করে লম্বা শাটার স্পিড সেট করা যায়।
অ্যাপারচার বা এফ-স্টপ: এফ/১১ – আইএসও সেটিঙের মতোই, আমি অ্যাপারচার সেটিং এফ/১১-এ নিয়ে রেখে দিয়েছিলাম। এর মূল কারণ হচ্ছে ছবির তীক্ষ্ণটা বর্জন না করে বা খুব বেশি লম্বা শাটার স্পিড না দিয়ে যতোটা সম্ভব ক্ষেত্রের গভীরতা ধারণ করা। অ্যাপারচার এফ/১৬-এ দিলে বরং আরও বেশি গভীরতা পাওয়া সম্ভব। তবে এতে করে শাটার স্পিড ১০ সেকেন্ড বা তারও বেশি লাগতে পারে। ফলে বজ্রপাতটি ফ্রেমকে ঝলসে দিতে পারে। একইভাবে, এফ/৮-এরও কিছু সমস্যা রয়েছে। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, আমি এই দুইটি অ্যাপারচারেই সফলভাবে বজ্রপাতের ছবি তুলেছি। তবে এক্ষেত্রে সাফল্যের হার এফ/১১-এর চাইতে কম। আমি আপনাকে এফ/১১ অ্যাপারচার দিয়ে শুরু করার পরামর্শ দিবো। এই সেটিঙে কিছু ছবি তুলে নিন। এরপর অন্যান্য অ্যাপারচার দিয়ে নিরীক্ষা করে দেখুন কিছু হয় নাকি।
শাটার স্পিড: ৪ থেকে ৬ সেকেন্ড – বজ্রপাতের ছবি তোলার সেরা সময় হচ্ছে অন্ধকার হয়ে যাওয়ার পর। ফলে লম্বা শাটার স্পিড দরকার হবে। বজ্রপাতের ছবি তোলার আদর্শ সময় ম্যাজিক আওয়ারের মতোই আগেভাগে শুরু হতে পারে তবে অন্ধকার হয়ে গেলে বা হওয়ার মুখে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। বজ্রপাতের ছবি তোলার জন্য সবচাইতে দ্রুত শাটার স্পিড হচ্ছে ৪ সেকেন্ড। এতে করে ঘন ঘন বজ্রপাত হলে শাটারটি অন্তত একটি বজ্রাঘাতের ছবি তোলার সময় পর্যন্ত খোলা থাকবে। শাটার স্পিডের যথার্থ সময় হচ্ছে ৬ সেকেন্ড। এর ফলে শাটারটি এমন সময় পর্যন্ত খোলা থাকে যাতে বজ্রপাতের ছবি ওভার বা আন্ডারএক্সপোজ না হয়।
হোয়াইট ব্যাল্যান্স: অটো – আবারও আমি আমার ক্যামেরার হোয়াইট ব্যাল্যান্স অটো সেটিঙে দিয়েছি এবং ওভাবেই রেখে দিয়েছি। কারণ লাইটরুমে পোস্ট প্রসেসিঙের সময় চমৎকার ফ্লেক্সিবিলিটি আর নিয়ন্ত্রণ পাওয়া যায়। এখানে আমি প্রতিটি ছবির চাহিদা অনুসারে আমার পছন্দমতো হোয়াইট ব্যাল্যান্স ফাইন-টিউন করতে পারি।
ইমেজ ফরম্যাট: র – র ফরম্যাটে শুট করা সবচাইতে ভালো উপায় কারণ এতে এডিটিং সফটওয়্যারে ছবি পোস্ট প্রসেসিঙ বা ডেভেলপিঙের সময় সবচাইতে বেশি এডিটিং অপশন পাওয়া যায়।
পরামর্শ অনুযায়ী সেটিং ঠিক করলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা সবচাইতে কম এবং সফল হওয়ার সম্ভাবনা সবচাইতে বেশি থাকে। একমাত্র যেই সেটিং করা এখনও বাকি তা হল ক্যামেরার ড্রাইভ মোড নিরবিচ্ছিন্ন করে দেওয়া। এই সেটিং ব্যবহার করে আপনি কেবল রিলিজে শাটার রিলিজ বাটন চালু এবং লক করতে পারবেন। বেশিরভাগ কেবল রিলিজে শাটার রিলিজ বাটন চাপ দিয়ে এবং একই সাথে এটিকে সামনের দিকে ঠেলে দিয়ে করা হয়।
ফলে ক্যামেরা অনবরত একটার পর একটা ছবি তুলতে থাকে। এক্সপোজারের মধ্যে কোন সময়ের ব্যবধান থাকে না বললেই চলে। এর সুবিধা হচ্ছে তখন আপনাকে আর কোন কাজ করতে হয় না। আমি আপনাদের ৪ গিগাবাইট বা তার বেশি আকারের সিএফ বা এসডি কার্ড ব্যবহারের পরামর্শ দিবো। কারণ র ফরম্যাটে শুট করলে ইমেজগুলো খুব দ্রুত কার্ডে গিয়ে জমা হয়।
ধাপ ৬: অ্যাডোবি ফটোশপ লাইটরুমে বজ্রপাতের ছবি ডেভেলপ করা।
নিচের ছবিতে বেসিক এবং টোন কার্ভ সেটিঙের একটি স্ক্রিনশট দেওয়া হয়েছে। আমি অ্যাডোবি ফটোশপ লাইটরুমের ডেভেলপ মডিউলে এটি ব্যবহার করেছি।



লাইটরুমে বজ্রপাতের ছবি পোস্ট প্রসেসিং করার সময় অন্য কোন ছবির চাইতে আলাদা কিছুই আসলে করতে হয় না। আমি আমার সমস্ত র ছবি আমি লাইটরুমেই ডেভেলপ করি। কারণ এটি ফটোশপের ক্যামেরা রয়ের মতোই। আমার সব ছবিতেই আমি কন্ট্রাস্ট কার্ভ স্ট্রং কন্ট্রাস্ট সেটিঙে দিয়ে রাখি। আমি লাইটরুমে আজ পর্যন্ত যতো ছবি ডেভেলপ করেছি তার সবগুলোতেই এই নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য বজায় রাখতে হয়েছে।
একটা বিশেষ বিষয় মনে রাখতে হবে যেটি নিয়ম নয় বরং রুচির ব্যাপার। তা হল বজ্রপাতের ছবিতে কালার টেম্পারেচারের বিষয়টি। আমি আমার বজ্রপাতের ছবিগুলো সাধারণ ছবির চাইতে কম তাপমাত্রায় রাখতে পছন্দ করি। ফলে এক ধরণের বৈদ্যুতিক আবহ আসে। উপরের স্ক্রিনে দেখতে পাচ্ছেন যে এখানে একমাত্র অন্য যেই পরিবর্তনটি এনেছি তা হল কালো দিকটায় অন্ধকারের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া। এতে করে ইমেজের স্যাচুরেশন একটুখানি বেড়ে যায় সেই সাথে কালো জায়গাগুলো আরও অন্ধকার হয়ে যায়। ফলে বজ্রপাতের উপর আরও বেশি ফোকাস আনা সম্ভব হয়।
নিচে একটি সম্পূর্ণভাবে ডেভেলপ করা বজ্রপাতের ছবি দেওয়া হল। এই বজ্রাঘাতগুলো গ্র্যান্ড প্রেইরির পূর্বসীমায় অবস্থিত মাউন্টেইন ক্রিক লেকের তীরে পাওয়ার ট্রান্সমিশন লাইনের নিচে তোলা হয়েছে। গ্রীষ্মের শেষদিকের টেক্সাসের এক ঝড়ের মধ্যে।



অনুপ্রেরণা
আপনার উপভোগের জন্য নিচে আরও ৫টি ছবি দেওয়া হল। আশা করি আপনি বজ্রপাতের ছবি তুলতে আরও আগ্রহী হবেন।



উপরের সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত ছবিটি যেই লোকেশনে তোলা ঠিক একই জায়গা থেকে তোলা এই বজ্রাঘাতগুলো আগের ছবির বজ্রাঘাতের ঠিক কয়েক মিনিট আগে ঘটেছে।



এই ছবিটি টেক্সাসের গ্র্যান্ড প্রেইরির দুইটি বড় বড় হাইওয়ের ইন্টারসেকশনের কাছাকাছি তোলা। এই ছবিতে যে “স্পাইডার লাইটনিং” দেখা যাচ্ছে সেটি কয়েক মিনিট পর দেখা যাওয়া মূল বজ্রপাতের পূর্বাভাস ছিল মাত্র। পুরো দিগন্ত জুড়ে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল বিকট বজ্রপাতের উজ্জ্বল আলো। নিচে আরও ভালো ছবি দেখতে পারবেন।
নিচের ছবি দুইটিও টেক্সাসের গ্র্যান্ড প্রেইরির পূর্বসীমায় অবস্থিত মাউন্টেইন ক্রিক লেকের তীরে তোলা হয়েছে। শেষ গ্রীষ্মের এই বজ্রবৃষ্টি যে বজ্রপাত তৈরি করেছিল সেটি বৃষ্টি হয়ে দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। সেই সাথে দক্ষিন দিকে এগুতে গিয়ে সিজি (ক্লাউড টু গ্রাউন্ড বা মেঘ থেকে মাটিতে) বজ্রাঘাতের দারুণ একটি প্রদর্শনী তৈরি করেছিল।






নিচের এই শেষ ছবিতে “স্পাইডার লাইটনিঙের” একটি অসাধারণ ছবি তোলা হয়েছে। এটি টেক্সাসের গ্র্যান্ড প্রেইরির দুইটি বড় বর হাইওয়ের ইন্টারসেকশনে তোলা হয়েছিলো। এই বিশেষ স্পাইডার লাইটনিং ছবিতে বজ্রপাত দিগন্ত বরাবর ডানে বামে দুই পাশেই ছড়িয়ে গিয়েছে যা খুব সহজে দেখা যায় না।



উপসংহার
ফটোগ্রাফির জগতের বেশিরভাগ জিনিসের মতোই আমি যে পদ্ধতিগুলো দেখিয়েছি সেগুলো বজ্রপাতের ছবি তোলার একমাত্র উপায় নয়। তবে আশা করছি এখান থেকে প্রাথমিকভাবে আপনি কিছু শিখতে পারবেন এবং নিরাপত্তা যদি মূল বিষয় হয়ে থাকে তাহলে এই প্রক্রিয়া বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগবে। কাজেই এরপর যখনই বজ্রপাতের গুরগুর শুনবেন তখনই যন্ত্রপাতি নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন এবং তুলে আনুন অসাধারণ কিছু ছবি!